NOISE

শব্দ দূষণ

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে ঘন বসতিপূর্ণ শহরগুলোর একটি। ব্যাপক টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক, প্রশাসনিক এবং অবকাঠামোগত সুবিধা নিয়ে এই শহরটি একটি মেগাসিটি হয়ে উঠেছে। এই শহরে প্রায় ৯০ লক্ষ লোকের বসবাস। নগরায়নের কেন্দ্র হওয়ায় ঢাকা সকল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এটি অন্যান্য শহরের বাসিন্দাদের নতুন কর্মক্ষেত্র এবং উন্নত জীবনমানের আশা দেখিয়ে আকৃষ্ট করছে। ঢাকা একটি ছোট শহর হওয়া সত্ত্বেও এটি প্রায় সকল শ্রেনি-পেশার মানুষকেই স্থান দিচ্ছে। ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, দিনমজুর, হকার, শিক্ষার্থী সকলেই ছোট বড় নানা সমস্যার মধ্য দিয়ে এই শহরে বসবাস করছে। কিন্তু নগরায়ন এবং শিল্পায়নের ফলে শহরের রাস্তাগুলোতে শব্দ দূষণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। পরিবেশ এবং মানবজীবনের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাবের কারণে এটি আমাদের জীবনে একটি অভিশাপের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে শব্দের গড় লেভেল ৮০-১১০ ডেসিবল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, কানের কোনো রকম ক্ষতি না করে মানুষ সর্বোচ্চ ৬০ ডেসিবল লেভেলের শব্দ শুনতে পারে। অথচ ঢাকায় এর মাত্রা প্রায় দ্বিগুণ। ঢাকার কয়েকটি এলাকায় শব্দ দূষণ এর সর্বোচ্চ মাত্রা ১২০-১৩০ ডেসিবলেও পৌঁছেছে। ৮-১১ টার পিক আওয়ার, যখন মানুষ স্কুল, কলেজ, অফিসের জন্য বের হয়, শব্দের মাত্রা তখন বেড়ে যায়। আবার স্কুল ছুটির সময় দুপুর ১২-২ টায় এবং পুনরায় বিকাল ৫টায় অফিস ছুটির পরে শব্দের মাত্রা অত্যধিক বেড়ে যায়।
শহরের সবচেয়ে কোলাহলোপূর্ণ অঞ্চল হলো বাংলা মোটর, শাহবাগ- বিএসএমএমইউ ও বারডেম হাসপাতলের সামনের অংশ; মগবাজার, মৌচাক, কাকরাইল রোডক্রসিং; হোটেল সোনারগাঁও; মৎস্য ভবন থেকে মালিবাগ রোড ক্রসিং; শেরাটন/রূপসী বাংলা এবং শান্তিনগর রোড ক্রসিং। এই অঞ্চলগুলোতে শব্দ দূষণের প্রভাব অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠানের ওপর পড়ে। শাহবাগে বিএসএমএমইউ এবং বারডেমের মতো প্রতিষ্ঠানে এগুলোর প্রভাব পড়ে। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫ এবং পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৭ অনুযায়ী, হাসপাতালগুলোর জন্য (১০০ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে) আদর্শ শব্দসীমা ৪৫ ডেসিবল। কিন্তু বাস্তবে এর পরিমাণ অনেক বেশি (যথাক্রমে ৮৫.৬ ডেসিবল এবং ৭৫ ডেসিবল)। এই অবস্থা অঞ্চলটিকে আরো স্পর্শকাতর করে তুলেছে।
শান্তিনগরে ক্লিনিক, মসজিদ, সিদ্দেশ্বরী গার্লস স্কুল এবং আবাসিক এলাকা রয়েছে। এলাকাটির চরিত্রানুযায়ী আদর্শ শব্দসীমা হওয়া উচিত ৪৫ থেকে ৫০ ডেসিবল (৯৫ সালের আইন ও ৯৭ সালের বিধি অনুযায়ী)। কিন্তু দিনের বেলায় এই অঞ্চলে সর্বোচ্চ এবং শব্দনিম্ন শব্দের লেভেল যথাক্রমে ৮২ ডেসিবল এবং ৭২.২ ডেসিবল। সুতরাং, এই অঞ্চলটি শব্দ দূষণের শিকার।

এই অবস্থা সামাজিক পরিবেশের দুর্বলতাকে আরো বাড়িয়ে তোলে। ছুটির দিনগুলোতে স্কুল, কলেজ ও অফিস বন্ধ থাকায় পরিস্থিতি তুলনামূলক ভালো থাকে। কিন্তু তারপরও অনেক নাগরিক এবং দিনমজুররা ছুটির দিনেও কাজ করে এবং যাতায়াতের জন্য বাসসহ অন্যান্য পরিবহনের ওপরই নির্ভর করে। এছাড়াও ছুটির দিনগুলোতে মানুষ বিনোদনের জন্য পার্কে ঘুরতে বের হয়, সেমিনারে অংশ নেয় এবং শপিংয়েও বের হয়। উপরন্তু, বেশিরভাগ সময় এই গুরুত্বপূর্ণ এলাকাটিতে নানা ধরনের মেলা ও কর্মকাণ্ড সংঘটিত হতেই থাকে।

যানবাহনের ত্রুটিপূর্ণ ইঞ্জিন, যানজট এবং গাড়ির জোরালো হর্ন শহরাঞ্চলগুলোতে শব্দ দূষণের অন্যতম প্রধান উৎস। ঢাকায় যানজটে আটকে থাকার সময় প্রায় ৫০০-১০০০ গাড়ি উচ্চশব্দে হর্ন বাজাতে থাকে। বিভিন্ন ধরনের যানবাহন যেমন বাস, কার, সিএনজি, রিক্সা, মোটরসাইকেলগুলো যানজটকালে একই সময়ে হর্ন বাজায়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তথ্যানুযায়ী, ঢাকায় প্রায় ৩৫০০ ট্রাফিক পুলিশ সদস্য রয়েছে। কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের মতে, এই ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের মধ্যে অর্ধেকই বায়ু এবং শব্দ দূষণের কারণে শ্বাসকষ্ট এবং কানের সমস্যায় ভোগে। কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের ড. ফারহানা ইসলাম শান্তা জানান, প্রতিদিনই প্রায় ১০০-১৫০ পুলিশ সদস্য শ্বাসকষ্ট, কান এবং হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে আসেন। তিনি বলেন, “যদিও আমাদের কাছে নির্দিষ্ট সংখ্যা নেই, তবে আমাদের ধারণা প্রায় অর্ধেক ট্রাফিক সদস্য বিশেষত কন্সটেবলরা এই ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন।” তিনি আরো জানান, দীর্ঘদিন যাবত শব্দ দূষণের ভেতর দিয়ে যাওয়ার ফলে তাদের ঘুমের মান এবং শারীরবৃত্তিক স্বাস্থ্যে তা প্রভাব ফেলছে।

শব্দ দূষণের অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে নির্মাণাধীন অঞ্চল, ফ্যাক্টরি এবং আবাসিক এলাকায় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন। প্রত্যেক প্রবেশপথে লাউডস্পিকারে ধর্মীয় বাণী প্রচারও শব্দ দূষণের আরেকটি কারণ।
হাসপাতাল, স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে নীরব অঞ্চলের অভাবে রোগী এবং শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ৬২ বছর বয়স্ক ধানমন্ডির বাসিন্দা সিতারা খাতুন বলেন, “আমার এলাকায় বেশ কয়েকটি স্কুল রয়েছে। বাবা মায়েরা যখন তাদের সন্তানদের স্কুল থেকে নিতে আসেন তখন উচ্চশব্দের হর্ন খুবই সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। যানজটের পাশাপাশি এই যানবাহনগুলো অনেক শব্দও তৈরি করে। ব্লাড পেশারের রোগী হিসেবে বিশেষ করে আমার আরো বেশি সমস্যা হয়।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য মতে, সাধারণভাবে ৬০ ডেসিবল মাত্রার শব্দ মানুষকে অস্থায়ীভাবে এবং ১০০ ডেসিবল মাত্রার শব্দ চিরস্থায়ীভাবে বধির করে ফেলতে পারে। শব্দ দূষণ পরবর্তীকালে মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর তীব্র প্রভাব ফেলতে পারে। আপাতভাবে এগুলো হয়ত কোনো প্রভাব ফেলবে না, কিন্তু ভবিষ্যতে এগুলো বিপদ বাড়াতে পারে। মাস কিংবা বছরব্যাপী শব্দ দূষণের মধ্যে থাকার ফলে মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর কী ধনের প্রভাব পড়তে পারে তার কিছু নমুনা নীচে দেখানো হলো:

  • সবচেয়ে তাৎক্ষণিক প্রভাবটি হলো মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি। উদাহরণস্বরূপ, বিমানবন্দরের খুব কাছাকাছি থাকা মানুষেরা অনেকটা চঞ্চল হবে। অবিরাম শব্দ একজন মানুষকে আতংকগ্রস্ত করে তুলতে পারে। আবার তাকে মানসিক অবসাদগ্রস্তও করে ফেলতে পারে।
  • আরেকটি তাৎক্ষণিক প্রভাব হলো, শব্দ দূষণ পরিষ্কারভাবে শোনার ক্ষমতাকে হ্রাস করে। স্বল্পসময়ের জন্য হলেও, শব্দ দূষণ একজনকে অস্থায়ী বধির করে ফেলতে পারে।
  • শব্দ দূষণ হৃদযন্ত্রের ওপরও প্রভাব ফেলে। দেখা গেছে, হৃৎপিণ্ড স্বাভাবিকভাবে যে হারে রক্ত সঞ্চালন করে, অবিরাম শব্দ দূষণের সময় সেই হার বেড়ে যায়। এর পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হিসেবে হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, ধড়ফড়ানি, শ্বাসকষ্ট, এমনকি খিঁচুনি পর্যন্ত হতে পারে।
  • শব্দ দূষণের ফলে অক্ষিতারকার প্রসারণ ঘটতে পারে, যার ফলে ভবিষ্যতে দৃষ্টিসংক্রান্ত সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • শব্দ দূষণ হজম প্রক্রিয়াতেও বিঘ্ন ঘটায়। এর ফলে ভবিষ্যতে পাকস্থলীর জটিল সমস্যা হতে পারে।

মানুষের ওপর উচ্চমাত্রার শব্দের প্রভাব

  • শ্রবণক্ষমতা
  • নাড়ির স্পন্দনে তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন
  • ত্বকের উদ্দীপনা
  • সহ্যসীমা
  • বমি বমি ভাব, বমি, মাথা ঘোরা, স্পর্শানুভূতি এবং পেশীতে প্রভাব
  • কানে ব্যথা, মানুষের শব্দ সহনশীলতার সর্বোচ্চ সীমা
  • দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব হিসেবে ত্বক জেয়ালাপোড়া করে
  • দীর্ঘস্থায়ী হলে গৌণ স্থায়ী সমস্যা
  • অল্পসময়ে স্থায়ী ক্ষতি

শব্দ দূষণ বিধি, ২০০৬ (ব্যবস্থাপনা এবং নিয়ন্ত্রণ) অনুযায়ী, আবাসিক এলাকাগুলোতে দিনের বেলায় ভোর ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ৫৫ ডেসিবল শব্দ মাত্রা গ্রহণযোগ্য। রাত ৯টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত সেটা হয়ে যায় ৪৫ ডেসিবল। শান্ত এলাকাগুলোর জন্য দিনের বেলায় ৫০ ডেসিবল এবং রাতের বেলায় ৪০ ডেসিবল। মিশ্র এলাকাগুলোর জন্য দিনের বেলায় ৬০ ডেসিবল এবং রাতের বেলায় ৫০ ডেসিবল। বাণিজ্যিক অঞ্চলগুলোতে দিনের বেলা ৭০ ডেসিবল এবং রাতের বেলা ৬০ ডেসিবল এবং শিল্প অঞ্চলগুলোর জন্য দিনের বেলা ৭৫ ডেসিবল এবং রাতের বেলা ৭০ ডেসিবল। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, এই আইনের ব্যাপারে মানুষের সচেতনতা কেমন তা জানতে পরিচালিত একটি জরিপে দেখা যায়, ঢাকা শহরের ৪৬ শতাংশ মানুষ এই আইনটির ব্যাপারে জানেই না। খুব অল্প সংখ্যক মানুষই এই আইনটির প্রয়োগ দেখেছে।

 

শব্দ দূষণ কেন্দ্রিক বিদ্যমান আইন

  • শব্দ দূষণ বিধি, ২০০৬ অনুযায়ী আবাসিক এলাকাগুলোতে দিনের বেলায় ভোর ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ৫৫ ডেসিবল শব্দ মাত্রা গ্রহণযোগ্য। রাত ৯টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত সেটা হয়ে যায় ৪৫ ডেসিবল। গ্রামাঞ্চলগুলোতে দিনের বেলায় এটি ৫০ ডেসিবল এবং রাতের বেলায় ৪০ ডেসিবল।
  • আইনানুযায়ী, কোনো অনুষ্ঠানের অন্তত তিনদিন আগে আয়োজকদের স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। ব্যতিক্রম বা জরুরি অবস্থায়ও অন্তত একদিন আগে অনুমতি নিতেই হবে। শব্দসীমা অতিক্রমকারী যন্ত্রগুলো টানা পাঁচ ঘন্টা বা রাত দশটার পর বাজানো যাবে না।
  • এই নিয়ম মানা না হলে, মানুষ মৌখিক বা লিখিতভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করতে পারবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ৫০০০ টাকা জরিমানা বা এক মাসের কারাদণদ বা উভয়ই হতে পারে। তবে এক্ষেত্রেও শর্ত হলো, দায়ী ব্যক্তি যদি প্রথমবার আইনভঙ্গ করে তবেই এই শাস্তি প্রযোজ্য হবে।

ঢাকার বিকশিত হওয়ার ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এজন্য শব্দ দূষণের মতো সমস্যাগুলো অবশ্যই দূর করতে হবে। কিন্তু শব্দ দূষণ নামক এই ক্যান্সারের জন্য কাকে দায়ী করব, যখন সমস্যাটির সৃষ্টিকর্তা এবং ভুক্তভোগী- উভয়ই আমরা? সরকারের দিকে আঙুল তোলা সহজ, কিন্তু আমরা সম্মিলিতভাবে এগিয়ে না এলে সরকার একা কখনোই এই সমস্যার মোকাবিলা করতে পারবে না। সরকার/নীতিনির্ধারক, পরিকল্পনা সেক্টর, নাগরিক, গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক, মালামাল পরিবহন সেক্টর, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গণমাধ্যম, এনজিও- সকলকে এই সমস্যার বিরুদ্ধে আন্দোলনে যোগ দিতে হবে। সরকার এবং দেশের নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টিভঙ্গির সামান্য পরিবর্তনই এই সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখতে পারে। একটি ভালো ঢাকায় থাকার আশায় নাগরিক হিসেবে আমরা এই নীরব ঘাতকের বিরুদ্ধে একসাথে কাজ করতে পারি। এই সমস্যা মোকাবিলা এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের এখনই সময় যাতে আমরা এবং আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম একটি বাসযোগ্য স্বাস্থ্যকর শহর পেতে পারে।

শব্দ দূষণ

Dhaka, the capital of Bangladesh is one of the densely populated cities in the world. With extensive telecommunication networks, administration and infrastructure facilities, it is a megacity, home to almost 9 million people. Being the centre for all urbanized expansion, Dhaka serves as the hub for all economic activities. It attracts the people of other cities with a shining promise of more employment opportunities and a better lifestyle. Even though Dhaka is a small city, it gives a little space to people of all classes and professions businessmen, service holders, city dwellers, labourers, hawkers, students, who struggle every day with problems big and small.

But with the increase in urbanization and industrialization, the roads and highways of the capital city, there has been a rise of an acute problem of noise pollution. It has become a bane of our existence with its adverse effect on the environment and on human lives.

In Dhaka, the average sound level is 80-110dB in the prime areas. This is almost twice the maximum noise level that can be tolerated by humans – 60dB – without suffering a gradual loss of hearing, according to the World Health Organization (WHO). Sound pollution has reached its highest levels, of 120-130 decibels, at many points across Dhaka city. The noise rises during the peak hours from 8 am to 11 am when people leave the house for schools, college and office. Again from 12 noon to 2 pm when school’s over and from 5 pm onwards when offices close.

The noisiest parts of the city are Bangla motor, Shahbag – front of BSMMU and BIRDEM, Maghbazar, Mouchak, Kakrail – Road Crossing, Hotel Sonargaon, Malibag-Road Crossing front of Matsa Bhaban, Sheraton/Ruposhi Bangla and Shantinagar-Road Crossing. The impact zone of these noisy nodes influences many important and vulnerable institutions. Influence zone of Shahbag node covers vulnerable and important institutions like BSMMU and BIRDEM. According to Environmental Conservation Act-1995 (ECA’95) and Environmental Conservation Rules 1997 (ECR’97) the standard limit of sound for hospitals (up to a radius of 100 meters) is 45dB, but the actual level is much higher than that (have 85.6 dB and lav 75 dB).

The situation makes this zone more vulnerable. Inside the impact zone of Shantinagar, clinics, mosques, Shiddheswari Girls School and residential areas can be found. According to the characteristics of the zone, the standard sound limit is 45 dB to 50 dB (ECA’95 and ECR’97). But the actual highest and lowest average sound level (daytime) of this node is 82 dB and 72.2 dB. So, this place is affected severely by noise pollution.

This situation increases the state of vulnerability of the related socio-environment. On holidays, the condition is comparatively better as most offices, schools and institutions remain closed. Although many of the city dwellers and day labourers perform jobs and business in holidays and they have to travel by buses and other vehicles, and people come to this area to visit the park, to attend the conference and for marketing purpose in holidays. Moreover, most of the time, many types of fairs and events are organized in this important area. One of the major sources of noise pollution in urban areas is faulty engines of vehicles, traffic and loud horns. In Dhaka, 500-1,000 vehicles honk at the same time when stuck in traffic. The presence of different types of vehicles- Cars, Busses, CNGs, Rickshaws and Motorcycles continuously honk at each other at the same time.

Around 3,500 traffic police personnel are stationed in Dhaka, according to the Traffic Division of Dhaka Metropolitan Police (DMP). Almost half of the traffic police personnel stationed in the capital are suffering from breathing and hearing difficulties due to air and noise pollution, according to doctors at Central Police Hospital. Dr Farhana Islam Shanta, medical officer at Central Police Hospital, said that around 100-150 traffic cops visit the hospital every day with breathing, hearing and heart-related problems. “Although we don’t have an exact figure, we guess almost half of the traffic personnel, particularly the constables, are suffering from such health problems,” Dr Farhana Islam said. She said prolonged exposure to noise pollution is also affecting the quality of their sleep and physiological health.

Other causes of noise pollution include under-construction areas, factories, various cultural and political programs in residential areas. Religious sermons played through a loudspeaker in the entrance of every road is another big problem that causes sound pollution. Lack of silent zones around hospitals, schools and universities profoundly affect the health of the patients and the students. Dhanmondi resident Sitara Khatun, 62, said: “There are several schools in my area, and loud horns are common when parents come to pick up their children from school. Apart from traffic congestion, these vehicles also create a lot of noise which is a huge problem, especially for me as I have high blood pressure.”

According to the World Health Organization (WHO), generally 60dB sound can make a man deaf temporarily and 100dB sound can cause complete deafness. Noise pollution can take a severe toll on human health in the long run. These effects will not become apparent immediately, but there could be repercussions later on. The following is a list of the kinds of effects noise pollution will have on human health after continuous exposure for months, and even years:

  • The most immediate effect is a deterioration of mental health. As an example, people who are living too close to airports will probably be quite jumpy. Continuous noise can create panic episodes in a person and can even increase frustration levels.
  • Another immediate effect of noise pollution is a deterioration of the ability to hear things clearly. Even on a short-term basis, noise pollution can cause temporary deafness.
  • Noise pollution also takes a toll on the heart. It is observed that the rate at which heart pumps blood increases when there is a constant stimulus of noise pollution. This could lead to side-effects like elevated heartbeat frequencies, palpitations, breathlessness, and the like, which may even culminate into seizures.
  • Noise pollution can cause dilation in the pupils of the eye, which could interfere in ocular health in the later stages of life.
  • Noise pollution is known to increase digestive spasms. This could be the precursor of chronic gastrointestinal problems.

Effects of High Intensity Noise on Human Beings

  • Threshold of audibility
  • Significance change in pulse rate
  • Stimulation of reception in skin
  • Pain threshold
  • Nausea, vomiting, dizziness, interference with touch and muscle sense
  • Pain in ear, extreme limit of human noise tolerance
  • Prolonged exposure causing burning of skin
  • Minor permanent damage if prolonged
  • Major permanent damage in a short time

According to the Noise Pollution (Regulation and Control) Rules, 2006, acceptable sound levels are 55 decibels for daytime – 6am to 9pm –and 45 decibels for night – 9pm to 6am – in residential areas; 50 decibels for daytime and 40 decibels for night in quiet places; 60 decibels for daytime and 50 decibels for night in mixed areas; 70 decibels for daytime and 60 decibels for night in commercial areas; and 75 decibels for daytime and 70 decibels for night in industrial areas. But sadly, a survey done by the department of the environment to measure noise pollution and the public’s awareness of its legislation shows that 46% of the people in Dhaka are unaware of this law and very few has seen it being implemented.

 

The existing laws on noise pollution

  • According to Noise Pollution (Control) Rules, 2006, the acceptable sound condition is 55dB for daytime (6am to 9pm) and 45dB for night (9pm to 6am) in residential areas. It is 50dB for daytime and 40dB for nighttime in rural areas.
  • The law stipulates that organizers must take prior permission from local authorities at least three days before the program, or at least one day before in exceptional or emergency cases. The instruments that violate the sound limit cannot be used for over five hours a day, or after 10pm.
  • If violated, people can complain verbally or via a written format to authorized officers who can either issue a fine of Tk5,000 or hand out one-month prison sentences, or both, if the allegation is proven to be true and the offender has violated the law only once.

Dhaka city has a big potential to grow, but it cannot unless hazards like sound pollution are taken care of. But Who is to blame for this cancerous situation when we are the creator and sufferer at the same time. Pointing at Government is a common practice but Govt. cannot solve this problem alone if we do not step in collectively. Government/policymakers, Planning sector, Citizens, Public transport operators, Freight delivery sector, Waste management sector, Educational sector, Health sector, Media, NGOs- all concerning authorities need be actively participate to create a movement against it. A slight change in the viewpoint of the government, policy makes, legislators and the elites of the country can make significant impact in solving this problem. As citizens we can all work towards defeating this silent killer in the hopes of residing in a better Dhaka. It’s high time to take step forward to face this problem and take measurable actions so that we and our future generation can find a healthy livable city in future.